সিলেটের স্বনামধন্য জমিদার ও খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে (জিতু মিয়া)সাহেব তাঁর সমুদয় সম্পত্তি ধর্মীয় মানবসেবা ও সমাজের কল্যাণে নিবেদন করে ওয়াক্ফ এস্টেট প্রতিষ্ঠা করেছেন। যা বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অকল্পনীয় । খান বাহাদুর এহিয়া ওয়াক্ফ এস্টেটের কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভূ-সম্পত্তি ,জলমহাল,হাট বাজার ইজারা ও বন্দোবস্থ দিয়ে রাজস্ব আদায় করা এবং ঐ আয় থেকে ওয়াকফ দলিলের নির্দেশনামতে বিভিন্ন সেবা ও জনকল্যাণমূলক খাতে ব্যয় করা হয়। ওয়াক্ফ এস্টেট হতে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও বিশেষ কিছু উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম নিম্নে দেয়া হলো :
১। আর্থিক অনুদান প্রদান : ওয়াক্ফ দলিলে গরীব, বিধবা হিন্দু, খ্রিষ্টান,মুসলিম যারা এককালে স্বচ্ছল এবং সামাজিক মর্যাদা ছিলো, মান সম্মানের কারনে দারিদ্রতা থাকা স্বত্বেও সাধারন লোকের নিকট হাত পাততে দ্বিধাবোধ করেন,এমন লোককে ওয়াকফ্ ডিডের নির্দেশনা মতে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়।
২। ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়নে অনুদান প্রদান : মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা, বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষার উন্নয়নে আর্থিক সাহায্য প্রদানের যে নির্দেশনা রয়েছে তা পালন করা। দলিলের নির্দেশনামত বিশেষ কিছু কার্যক্রমের কথা বলা আছে, নিম্নে বর্ণনা করা হলো। যেমন :
৩। কাদেরিয়া বৃত্তি : ১৯৯২খ্রিঃ থেকে এস্টেটের ওয়াকিফের প্রতিষ্ঠাতার পিতা মৌলভী আব্দুল কাদিরের নামে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি শিক্ষাবৃত্তি চালু আছে। বৃত্তিটি সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে প্রদান করা হতো। ২০০৪ খ্রিঃ সনে তদানিন্তন মোতাওয়াল্লী জনাব মোঃ আব্দুস সালাম খান বৃত্তিটি কেবল মাত্র আলিয়া মাদ্রাসা সিলেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, সিলেট বিভাগের সকল মাদ্রাসা (আলিয়া, কওমী, মহিলা) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিতরন করার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে কাদেরিয়া বৃত্তিটি সিলেট বিভাগের ০৮টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়। ২০২৪ সনে বৃত্তিটি বিতরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
৪। খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া (জিতু মিয়া) শিক্ষাবৃত্তি :
খান বাহাদুর এহিয়া ওয়াকফ এস্টেট সিলেটের ওয়াকিফের প্রতিষ্ঠাতা খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া এর মহান ত্যাগ ও কর্মকে স্মরণীয় করে রাখা এবং সিলেট অঞ্চলের ছাত্র/ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার ও মোতাওয়াল্লী ড. জাফর আহমেদ খান এর উদ্যোগে ২০০৯ সাল থেকে “খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া (জিতু মিয়া) শিক্ষাবৃত্তি” নামে স্কুলের এস,এস,সি উত্তীর্ণ ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য একটি শিক্ষা বৃত্তি চালু করেন। ২০২৪ সনে বৃত্তিটি বিতরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে গরীব জনসাধারন ও বেনিফিসিয়ারীদের মধ্যে এবং মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান, ঈদগাহের জন্য বিশেষ করে শিক্ষা, চিকিৎসা, বিধবা, কন্যাদায়গ্রস্থ গরীব লোককে অর্থাৎ আর্থ-মানবতার সেবায় অনুদান বিতরণ করা হয়ে থাকে।
বর্ণিত কার্যক্রম তাছাড়াও সময়ে সময়ে ওয়াক্ফ প্রশাসক বাংলাদেশ এর নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সরকারী দিবসসমূহ যথাযথভাবে পালন করা হয়ে থাকে।